প্রকাশিত: Wed, May 29, 2024 3:22 PM
আপডেট: Sun, Jun 22, 2025 12:33 AM

ভেবেছিলাম, আওয়ামী উন্নয়নের মচ্ছবে অন্তত চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা দূর হবে

মিরাজুল ইসলাম

ধূমায়িত কফির মগ হাতে রিমেল-হিমেল বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতার ফুটেজ উপভোগ করছিলাম বিভিন্ন মিডিয়া চ্যানেলে। এতো সুন্দর দৃশ্য .. ভোলা যায় না। বারবার নস্টালজিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছিলাম। দেখে ভালো লাগলো, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন মেয়র এবং চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ হাতে হাত মিলিয়ে উন্নয়নের নামে প্রচুর টাকা আত্মসাৎ করতে পেরেছেন। সাবেক মেয়রের নাছির সাহেবের হয়তো মন খারাপ এসব দেখে। এর আগেও এমন দুর্যোগের ঘটনা ঘটেছে। এবার যেহেতু বিরোধী দল বলে কিছু নেই, তাই গালগালি না করে সবাই পানিবন্দী জীবন উপভোগ করছে। তার ভাগ্যটাই খারাপ। রিমেল পরবর্তী জলাবদ্ধতার দৃশ্য দেখে আমার নিজেরও কিছু স্মৃতি মনে পড়লো।

২০০৫ সালের এক বিকেলে আগ্রাবাদ, মুরাদপুর, বহদ্দারহাট এলাকা প্রবল বর্ষণের কারনে ডুবে গিয়েছিল। তখন আমি বন্দরের নিমতলী এলাকায় এক ওষুধের দোকানে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করি। রাতে চেম্বার থেকে বের হয়ে দেখি হাঁটু সমান পানি। কোনো যানবাহন নেই। বাধ্য হয়ে জুতা-মোজা খুলে সারা শরীরে হাঁটু পানি ঠেলে অনেক রাতে ঘরে ফেরা। বুদ্ধদেব বসুর বর্ষণ ক্লান্ত পুরানা পল্টনের বর্ণনাও হার মানাবে। এভাবে বহুবার জীবিকার প্রয়োজনে কোমর সমান পানি ঠেলে মুরাদপুর-ষোলশহর দুই নম্বর গেট পার হয়ে বহদ্দারহাট এলাকায় যাতায়াতের দুর্বিসহ স্মৃতিগুলো এখন রোমাঞ্চকর মনে হয়।

তাছাড়া ২০০৮ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত আগ্রাবাদ এক্সেস রোডকে কখনো খাল কখনো ছোট নদী কখনো সাগরের জোয়ার-ভাটায় নানা রূপে দেখেছি। সেইসব নিয়ে প্রচুর ফটোগ্রাফ আর লেখালেখি সময়ের পাতায় আটকে আছে। ভেবেছিলাম, আওয়ামী উন্নয়নের মচ্ছবে অন্তত চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা দূর হবে। কিন্তু বাংলাদেশে কোনো একদিন গণতন্ত্র ফিরে এলেও এই জলাবদ্ধতার সমাধান হবে না। নিজ শহরে ফিরলে কোনো এক বর্ষণমুখর দিনে আগ্রাবাদের রাস্তায় প্রচুর তেলাপিয়া-মাগুর মাছ ধরতে পারবো এবং ভেজে খাব! লেখক ও চিকিৎসক